_ হ্যালো লাল পরী
_ এই তুমি আমার সাথে আর কথা বলবানা
_ কেনো.. কেনো…? কি হয়েছে?
_ কি আর হবে! কিছুই হয়নি
_ তাহলে কথা বলতে নিষেধ করছ কেন?
_ আচ্ছা ব্লগ এ যেই গল্প গুলো লেখ সব গুলোতে এমন নীল পরি, নীল শাড়ি দেও কেন? কোন ডানা কাটা পরী তোমার সামনে নীল শাড়ি পরে আসে? যে সব গল্পতে শুধু নীল শাড়ি আর নীল শাড়ি?
_ আরে আমার একমাত্র পরী তো তুমিই…
_ তাহলে নীল পরীর গল্প কেন লেখো?
তুমি তো আমাকে লাল পরী বল…. আর তোমার ও প্রিয় রং লাল তাইনা?
_ হুম। আচ্ছা বাবা ঠিক আছে আজকে থেকে লাল পরীর গল্প লিখব.. ..ঠিক আছে?
_ না থাক লিখতে হবেনা…
_ কেনো..? আবার কি হল?
_ তোমার লাল পরী বাস্তবে আসবে তোমার কাছে গল্পে নয়…. ঠিক আছে।
যেদিন তোমার লাল পরী তোমার সামনে আসবে সেদিন লাল পরীর গল্প লিখবে ওকে….
_ হুম… কিন্তু সেই দিন টা কবে আসবে মেম….? আমি যে সেই দিনের অপেক্ষায় বসে আছি….
_ খুব দ্রুত সেই দিন টা আসছে সাহেব
একটু অপেক্ষা করুন
_ অপেক্ষা করতে করতেই আমি মরে যাব _ এই রবি এই কথা কখনো বলবানা….
আরেকবার বললে আমিই তোমাকে মেরে ফেলবো কিন্তু…
_ ওকে ওকে সরি, আর কখন বলবো না।
_ হুম মনে থাকে যেন…
_ আচ্ছা নিধি তোমার না সামনে এক্সাম
যাও পরতে বস ( বেশ রাগি গলায়)
_ যাব যাব তার আগে বল…
_ কি বলব? কিছু বলার নেই যাও পরতে বস
_ কিচ্ছু বলার নেই…?
_ না কিছুই বলার নেই। এইবার যাও পরতে বস, না হলে এক্সাম এ একটা বড় আকারের ডিম পাবা
_ হি হি হি। অই ডিম তোমাকে রান্না করে খাওয়াব।
_ নিধি পাইজলামি না…. যাও পরতে বস প্লিজ
_ আগে বল, তারপর যাচ্ছি…..
_ ওকে লাভ উ,,, এবার যাও
_ না না ঠিক করে বলতে হবে। তা না হলে যাব না….
_ বললে যাবে তো…?
_হুম যাব।
_ ওকে আই লাভ ইউ…. এবার যাও
_ওকে লাভ ইউ টু…. বাই
_ বাই
রবি আর নিধির পরিচয় ফেসবুক নামক
ভার্চুয়াল জগতে হয়। রবি লেখালেখি করতে খুব ভালবাসে তাই সে বিভিন্ন ব্লগ এ গল্প লেখে…আর নিধি ছিল একজন নিয়মিত পাঠিকা…নিধি গল্প পড়তে খুবই ভালবাসে। সে সবার গল্প পড়ত। একদিন একটা গল্প পড়ল এবং তা নিধির খুব ভাল লেগে গেল….
তাই সে সাত পাঁছ না ভেবেই গল্পের লেখক কে রিকুয়েস্ট দিয়ে দিয়েছে
আর গল্পের লেখক ছিল রবি… রবি আবার কোন মেয়ের রিকুয়েস্ট একসেপ্ট
করে না ফেইক ভেবে। প্রায় এক মাসের মত রিকুয়েস্ট টা ঝুলে রইছে….
এবার নিধি প্রচন্ড রেগে গিয়ে রবি কে ম্যাসেজ করেছে
_ এই যে মিঃ…. আপনার এত দেমাক কিসের? একমাস ধরে রিকুয়েস্ট টা ঝুলে রইছে দেখতে পাচ্ছেন না। একসেপ্ট না করলে না করুন ক্যান্সেল করতে পারছেন না? যদি একসেপ্ট নাই করেন….
ম্যাসেজ টা সিন হয়ে রয়েছে কিন্তু কোন
রিপ্লে আসে নি। এতে নিধি আরো রেগে গেলো…সে আবার ম্যাসেজ করছে
_ কি হলো রিপ্লে দিচ্ছেন না কেনো
রিপ্লে দিলে কি হাত টা পচেঁ যাবে,,,,
এবার রবি রিপ্লে দিল
_ আপনার প্রোবলেম টা কি…? আমাকে ডিস্টার্ব করছেন কেনো?
_ কেনো করছি জানেন না….!
_ নাহ। জানিনা, এখন বলেন
_ আপনি আমার রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করছেন না কেনো?
_ দেখুন কার রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করব আর কার টা করবো না সেটা সম্পুন্য আমার ব্যাপার সো আর ডিস্টার্ব করবেন না প্লিজ
_ হ্যা সেটা সম্পুন্যই আপনার ব্যাপার
কিন্তু রিকুয়েস্ট যখন একসেপ্ট করবেন নাই তাহলে ঝুলিয়ে রাখছেন কেনো?
ওটা ক্যান্সেল করুন
_ আপনার ইচ্ছা হলে আপনি করুন
_ মানে টা কি?
_ আপনি কি কচি খুকি যে মানে বুজতেছেন না,,,,
_ আপনি যখন ওটা একসেপ্ট করবেন নাই তাহলে ওটা ক্যান্সেল করার দায়িত্ব আপনার সো ওটা আপনি ক্যান্সেল করবেন।
রবি আর না পেরে শেষে রিকুয়েস্ট টা একসেপ্টই করেই নেয়।
নিধি আইডির উপর এক্টিব দেখে বুঝলো
রবি তার রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেছে
_ থ্যাংকস একসেপ্ট করার জন্য…..
রবি আর কোন ম্যাসেজ দিল না
নিধি ও কিছুদিন আর মেসেজ দেয় নি
কয়েক দিন পর নিধি আবার ম্যাসেজ দিল
_ হ্যালো
_ হাই
_ কেমন আছেন…?
_ভাল।
_অহহ
_হুমমম
_ আচ্চা আমিই প্রশ্ন করে যাচ্ছি আপনি কেন করছেন না? এতো দেমাক কিসের শুনি…..
_……….
_আমরা কি ভাল বন্ধু হতে পারিনা..?
_ হুম। পারেন..
_ওকে আজকে থেকে আমরা ফ্রেন্ড
এভাবে ওদের পরিচয় হয়। আস্তে আস্তে তাদের চ্যাটিং বাড়তে থাকে। বলতে গেলে সারাদিনই তারা চ্যাট করত কিন্তু কখন কেউ কাওকে দেখেও নাই তাদের ইচ্ছা হল তারা সামনাসামনি প্রথম দুজন দুজনকে দেখবে তাই কেও কারোর ছবি
পর্যন্ত নেয় নি……..
এভাবে তাদের ফোন কন্ট্রাক্ট ও চ্যাটিং
চলতে থাকলো …..তারা শুধু বন্ধু ছিলনা বন্ধুর থেকে এক ধাপ এগিয়ে আছে তাদের সম্পর্ক……..
নিধি এবার ইন্টার ফাইনাল দিবে আর রবি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে…… নিধির সামনে এক্সাম তাই রবি তার সাথে ইদানিং কথা একটু কমই বলে….
কিন্তু নিধি রবির সাথে কথা না বলে এক মিনিট ও থাকতে পারে না…. তাই একটু পর পর রবি কে কল করে আর কিছু বকা খেয়ে কিছুক্ষন পড়ে……তাদের বন্ধুত্তের
এক বছর হতে আর বেশি দেরি নেই আর
মাত্র দুই মাস কিন্তু এটাও তাদের কাছে অনেক দিন। আর এই দুই মাসের মধ্যেই নিধির পরিক্ষা…..
যথারীতি নিধির এক্সাম ও শেষ হল
আর কিছুদিন পরই ওরা দেখা করবে
_ এই আমরা কোথায় মিট করব
_ আমরা রমনা পার্কে মিট করব ওকে…
_ওকে…. তুমি কি পরে আসবে….?
_ আমি আমার লাল পাঞ্জাবী টা পরে আসব ঠিক আছে
_ হুম । ঠিক আছে,,, কিন্তু আমি তোমাকে চিনব কি করে
_ আমার হাতে একটা হলুদ রুমাল রাখবো আর তুমিও রাখবা….
_ ওকে
অবশেষ এ সেই দিনটি আসলো যেই দিনে চার চোখ একত্রিত হবে,,,
নিধি পার্কে এসে বসে রয়েছে কিন্তু এখন এমন কাওকে দেখে নাই যার হাতে হলুদ রুমাল আছে….
রবি পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দিল
পার্কে গিয়ে অনেক্ষন খুজলো কিন্তু কোন মেয়ের হাতে হলুদ কাপড় দেখলোনা
অনেক্ষন পর তার নজর গেল পার্কের কোনায় ওখানে একটা মেয়ে বসে আছে
মেয়ে বললে ভুল হবে এ যেন এক ডানা কাটা পরী চুল গুলো ছাড়া,,, তাই মেয়েটাকে অসম্বব সুন্দর লাগছে, কিন্তু রবি ভাবতে লাগলো এটাই কি তার লাল পরী,,,, আর বেশি ভাবতে পারলো না,, তাই রবি ওই দিকে গেল এবং দেখলো মেয়ের হাতে একটা হলুদ রুমাল।
_ এক্সকিউজমি…. আপনি কি নিধি?
_ রবি
_ হুম। তুমিই নিধি
_ হুম
_চলুন হাটা যাক
_ ওকে
_ তুমি কি সত্যিই কোন মেয়ে…?
_ মানে..!
_ না মানে আমার মনে হচ্ছে আমি একটা পরীর সাথে হাটছি
_ একটা হাসি দিয়ে নিধি বললো,,,ওহ তাই নাকি?
_ হুম
_ তো আজকে থেকে আমার সতীন কে কি ছাড়তে পারেন…?
_ মানে…!
_ মানে নীল পরীর গল্প কি ছাড়তে পারেন…
_ হুমম,, আজকে থেকে শুধু আমার পরীর গল্প লিখব। আচ্ছা ওসব ছাড়,, তুমি আমাকে আপনি করে কেন বলছ?
_ তো কি বলে ডাকবো
_কেন এতদিন যা বলতে….
_ হুম ডাকবো,, কিন্তু কোন অধিকারে ডাকবো
_ ভালবাসার অধিকারে
_ কিন্তু আমি তো এখন ওই অধিকার পাইনি
_ নিধি আমি তোমাকে আজকে একটা যায়গায় নিয়ে যাব যাবে তুমি
_ কোথায়….?
_ ওটা সারপ্রাইজ,,,, তুমি যাবে
_হুম
রবি একটা রিকশা ডেকে নিল,,,, তারপর রবি নিধিকে নিয়ে একটা বাসায় গেল
প্রথমে নিধি খুব ভয় পেল কিন্তু নিধির ভয় তখন কেটে গেল যখন দেখলো একটা মহিলা দরজা খুলে খুব আদর করে নিধি কে ঘরে নিয়ে গেল…. নিধি অবাক হয়ে রবির দিকে তাকিয়ে রয়েছে আর রবি হাসছে,,, তখন রবি বললো নিধি উনি আমার মা,, তখন নিধি ওনাকে সালাম দিল, বাবার সাথেও পরিচয় করিয়ে দিল নিধিকে রবি,,,, তখন রবি নিধি কে বললো ওনাদের তোমার পছন্দ,,, ওনারা তোমাকে তাদের ছেলের বউ করতে চায়।নিধির মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়,,, নিধি বললো হুম অনেক পছন্দ হয়েছে,,
রবির বাবা মা নিধির পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের বিয়ে নিয়ে, ,,,
দুজনের পড়ালেখা শেষ হলে ওনারা চার হাত এক করে দিতে চান,,,নিধির পরিবার ও রাজি হয়ে যায়……
এভাবে তাদের রিলেশেন পাঁছ বছর চললো,,,, পাঁচ বছর পর আজকে তারা এক হয়েছে,,, চার হাত এক হয়েছে,চারটি চোখের মিলন হয়েছে




No comments:
Post a Comment