Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Wednesday, November 6, 2019

গর্ভাবস্থায় শুতে সমস্যা? দেখে নিন সহজ সমাধান

গর্ভাবস্থায় শুতে সমস্যা? দেখে নিন সহজ সমাধান সন্তানকে পৃথিবীতে আনার আগে মা'কে সহ্য করতে হয় অনেক কষ্ট। কষ্টের থেকে রেহাই মেলে না ঘুমের সময়েও। প্রেগন্যান্সির সময় পেটের অংশ ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। ভ্রুণের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জরায়ুর আয়তন বাড়ে, এতে বুকের অংশে মেয়েরা অনেক সময়েই ব্যাথা অনুভব করেন, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। প্রেগন্যান্সির সময় স্ত্রী হরমোনগুলির ক্ষরণ বেড়ে যায়, ফলে শ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। এছাড়া পেটের আকার বাড়ায় চাপ পড়ে মেরুদন্ডের উপর। কোমর ও পিঠের ব্যাথাও বাড়ে এইসময়। এইসব মিলিয়েই কিন্তু ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। রাতের বেলায় তবে শান্তিতে গভীর ঘুমের কী উপায়? তা নিয়েই বিভিন্ন গাইনিকোলজিষ্টের বিভিন্ন রকম মত।

১। চিৎ বা উবু হয়ে শোবেন না: এতদিন হয়তো আপনি চিৎ বা উবু হয়ে শুতেই বেশি পছন্দ করতেন। কিন্তু প্রেগন্যান্সির সময় তা একেবারেই করা যাবে না। এমনটাই মত বেশিরভাগ গাইনিকোলজিষ্টের। তাদের মতে, একজন প্রেগন্যান্ট মহিলা যখন চিৎ হয়ে শোন, তখন তার মেরুদন্ড ও কোমরের হাড়ে অত্যন্ত চাপ পড়ে, যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। প্রেগন্যান্সির সময় একজন নারীর শরীরে রিলাক্সিন হরমোন ক্ষরিত হয় যা বিভিন্ন হাড়ের সংযোগস্থলের টেনডনকে আলগা করে দেয়। ফলে এই সময় তাদের হাড় যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়ে। পেটের আকার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই এই দুর্বল হাড়গুলোয় অত্যাধিক চাপ পড়ে। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটেই, যন্ত্রণা বাড়লে ঘুমও আসে না সহজে। জরায়ু বড় হয়ে যাওয়ায় চিৎ হয়ে শুলে হৃৎপিণ্ডের অ্যাওর্টা ধমনী দিয়ে রক্তসঞ্চালন বাধা পায়। ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে। উবু হয়ে শোওয়াও সমানভাবে ভ্রুণের জন্য বিপজ্জনক। এতে জরায়ুতে প্রচন্ড চাপ যা ভ্রুণের ক্ষতি করতে পারে।
২। পাশ ফিরে শোওয়ার অভ্যাস করুন: ডাক্তাররা প্রেগন্যান্ট মহিলাদের পরামর্শ দেন পাশ‌ ফিরে শুতে। এর পোশাকি নাম হল sleep on side বা সংক্ষেপে SOS। পাশ ফিরে শুলে আপনার কোমর ও পিঠের হাড়ে কোনরকম চাপ পড়ে না। ডানদিকে ফিরে শুলে জরায়ু একপাশে থাকে। ফলে তা আপনার অ্যাওর্টা ধমনির উপর চাপ সৃষ্টি করে না। হৃৎপিণ্ডের রক্তসঞ্চালনে তাই কোনও সমস্যার সৃষ্টি হয় না। পাশ ফিরে শোওয়ার আরেকটি ভালো দিক হল শ্বাসের সমস্যা না হওয়া। যেহেতু এক্ষেত্রে জরায়ু মধ্যচ্ছদায় চাপ সৃষ্টি করে না, তাই বুকে ব্যাথা, শ্বাসের সমস্যা ইত্যাদি হয় না। ডাক্তাররা বলেন বামদিকে ফিরে শোওয়া সবথেকে ভালো এবং এতেই সবচেয়ে আরামে ঘুমানো সম্ভব‌।কারণ আমাদের লিভার থাকে ডানদিকে, ফলে বামদিক ফিরে শুলে লিভারের উপর চাপ পড়ে না, আর ক্ষুদ্রান্ত্রও জরায়ুর অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্ত থাকে। এতে খাদ্যনালীর সিস্টেম যেন ঠিকঠাক কাজ করে, তেমনই ঘুমের ক্ষেত্রেও এনে দেয় আরাম।
৩। এদিক ওদিক ফেরা যাবে না: প্রেগন্যান্সির সময় ঘুমের অসুবিধার কারণে অনেকেই এদিক ওদিক ফিরে নিজের সবচেয়ে কমফোর্ট জোনকে খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে অহেতুক চাপ পড়ে হাড় ও হাড়ের জয়েন্টে। অনেকেই ঘুমের মধ্যে এদিক ওদিক ফিরতে বা শোওয়ার ভঙ্গি বদল করতেই অভ্যস্ত। এমনটা করলে নিজের অজান্তেই রক্তসঞ্চালনে সমস্যা তৈরী হতে পারে, শ্বাসের সমস্যায় ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে, এমনকি বাড়তে পারে কোমর ও পিঠের যন্ত্রণা। তাই ডাক্তাররা বলেন যেদিক ফিরেই শোন, পিঠের দিকে একটি পাশবালিশ রাখা যেন থাকে, এটি থাকলে সহজে শোওয়ার ভঙ্গি বদলানো অসম্ভব। অনেক মহিলারাই বলছেন পাশ ফিরে শুয়ে পা ভাঁজ করে দুপায়ের ফাঁকে একটি বালিশ রাখলে ভালো ঘুম হয়। এছাড়া পাশ ফিরে শুয়ে পেটের নীচে একটি বালিশ নিয়ে শুতেও অনেক আরামবোধ করেন। এই টোটকাগুলোও চেষ্টা করে দেখতেই পারেন, তবে সবার আগে এক্ষেত্রেও কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শই নেওয়া উচিত। তাই সেদিক থেকে কোনো ফাঁক না থাকাই ভালো।l

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages