Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Monday, November 4, 2019

নাক-মুখ চেপে হাঁচি আটকালে হতে পারে মৃত্যু!

নাক-মুখ চেপে হাঁচি আটকালে হতে পারে মৃত্যু!
চলছে শীতকাল। এ সময়ে ঠাণ্ডা-সর্দি প্রায় লেগেই থাকে। তবু দৈনন্দিন কাজ করতে হয়। সবার সঙ্গে চলতে হয় তাল মিলিয়ে। তাই হাঁচির শব্দে যাতে অন্যের কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য অনেকে নাক-মুখ চেপে তা আটকান। কিন্তু আপনি কী জানেন? এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে!
বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাঁচির গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১৬০ কিলোমিটারেরও বেশি। এটি চেপে রাখলে প্রবল চাপ পড়ে ফুসফুসের ওপর। যে কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে! ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে!
হাঁচি চেপে রাখলে যে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে! এর প্রমাণ দিলেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি হসপিটাল অব লিচেস্টারের এক চিকিৎসক। একটি গণমাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ের এক অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন তিনি।
এতে উল্লেখ করেছেন, ‘কিছু দিন আগে ৩৪ বছর বয়সী এক ভদ্রলোক গলায় অসহ্য ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই আঙুল দিয়ে নাক চেপে মুখ বন্ধ করে হাঁচি আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। এর পর থেকে গলায় অসম্ভব যন্ত্রণা অনুভব করেন। ঢোক গিলতে গেলে ভীষণ কষ্ট হয়। কণ্ঠস্বরও বদলে যায়।’
ওই চিকিৎসক আরওজানান, ‘স্ক্যান করে দেখা যায়;ওই ব্যক্তির গলবিল (খাদ্যনালি ও শ্বাসনালির সংযোগকারী অংশ) মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফুসফুসসংলগ্ন পেশিগুলোর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া স্তব্ধ হয়ে গেছে। ফুসফুসের স্বাভাবিক কাজও ব্যাহত হয়েছে। সাত দিন হাসপাতালে ছিলেন। এ সময়ে নল দিয়ে তাকে খাওয়ানো হয়েছে।’

সর্বোপরি সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

ঘন ঘন হাঁচি দেয়া প্রতিরোধের উপায়

কেউ যখন ঠান্ডায় আক্রান্ত হয় তখন নাক দিয়ে পানি ঝরা, নাকের ভেতরে যন্ত্রণা অনুভব করা, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া এবং অবশ্যই বার বার হাঁচি আসার সমস্যায় ভুগেন। হাঁচি ঠান্ডার সাথে সম্পর্কিত একটি সাধারণ সমস্যা। এটি তেমন কোন মারাত্মক সমস্যা নয় কিন্তু এটি যদি অনবরত হতে থাকে তাহলে তা বিরক্তিরই সৃষ্টি করে। কিছু সাধারণ ঘরোয়া উপায়ে এই সমস্যাটির সমাধান করা সম্ভব। চলুন তাহলে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
১। বিছুটি গাছ
অনবরত হাঁচি দেয়ার সমস্যাটির সমাধানের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে বিছুটি গাছ। যেকোন ধরণের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া এবং অ্যালার্জির কারণে সৃষ্ট হাঁচি থেকে মুক্তি দিতে পারে বিছুটি পাতা। ফুটন্ত পানিতে বিছুটি পাতা দিয়ে চা তৈরি করুন এবং দিনে ২-৩ বার এই চা পান করুন।
২। পিপারমেন্ট অয়েল
পিপারমেন্ট অয়েলের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান শুধু হাঁচিই প্রতিরোধ করেনা গুমোট নাকের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে। ফুটন্ত পানির মধ্যে কয়েক ফোঁটা পিপারমেন্ট অয়েল মিশিয়ে নিন। এরপর আপনার মাথাটি একটি বড় তোয়ালে দিয়ে ঢেকে ভাপ নিন। এর ফলে নাক পরিষ্কার হবে এবং সহজে শ্বাস নিতে পারবেন।
৩। ক্যামোমিল চা
এক কাপ গরম চা সব সময় ঠান্ডা ও কফ এর সমস্যায় আরাম দিতে পারে। ১টি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিন, এর মধ্যে কয়েকটি শুকনো ক্যামোমিল ফুল দিন। কিছুক্ষণ পর মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। এর সাথে মধু মিশিয়ে গরম গরম পান করুন। দিনে দুইবার এটি পান করলে অনবরত হাঁচি থেকে মুক্তি পাবেন।
৪। ভিটামিন সি
নিয়মিত সাইট্রাস ফল খাওয়া ভালো। লেবু, কমলা, জাম্বুরা ও আঙ্গুর ফল ঘন ঘন হাঁচির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। হারবাল চায়ের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে ইতিবাচক ফল পাবেন।
৫। গোলমরিচ
অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় গোলমরিচ বিভিন্ন প্রকারের শ্বসনতন্ত্রের সমস্যা মোকাবিলায় এবং হাঁচি নিরাময়েও সাহায্য করে। কুসুম গরম পানিতে গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার পান করুন, গারগল ও করতে পারেন।
৬। আদা
নাকের সমস্যার সমাধানের জন্য আদা প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। ঘন ঘন হাঁচি দেয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আদাকুঁচি চিবাতে পারেন। এছাড়াও ১/২ চামচ আদার রস প্রতিদিন পান করতে পারেন।
৭ ।রসুন
রসুনের কোয়ার তীব্র ঘ্রান হাঁচির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে। চিকেন স্যুপের সাথেও রসুন ব্যবহার করতে পারেন।
হাঁচি দেয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে অনবরত হাঁচি আসতে থাকলে তা নিজের জন্য ও আসে পাশের সবার জন্যই বিরক্তিকর ও বিব্রতকর। ধুলা বালি, পরাগ ও পোষাপ্রাণীর কারণে অ্যালার্জির সৃষ্টি হতে পারে । অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ার ফলে হাঁচি আসতে পারে। আবার কোন কোন ব্যক্তি উজ্জ্বল সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসা মাত্রই হাঁচি দিতে শুরু করে। উপরে বর্ণনাকৃত পদ্ধতিগুলোর যে কোনটি অনুসরণ করে দেখুন বিব্রতকর হাঁচির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages